নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার নলজানী এলাকায় সুদে নেওয়া টাকা আসল ও সুদসহ ফেরত দেওয়ার পরও জামানতের ব্ল্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত চাওয়ায় এক গার্মেন্টস স্টকলট ব্যবসায়ীকে মারধর ও তার গোডাউন থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও মামলা না নেওয়ায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ ঘটনায় মামলা গ্রহণ করে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কৌশিক আহমেদ। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় নিহারিকা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও গার্মেন্টস স্টকলট ব্যবসায়ী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৩) প্রায় ১০ মাস আগে পুলিশের কনস্টেবল শাহীন নূর আলম (৩৬)-এর কাছ থেকে সুদে ৪ লাখ টাকা নেন। জামানত হিসেবে শাহীন তার কাছ থেকে পাঁচটি ব্ল্যাংক চেক ও একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মামুন আসল ও কিছু সুদসহ টাকা ফেরত দিলেও শাহীন চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে, মামুন চেক ফেরত চাইলে শাহীন তার ভাইদের নিয়ে মামুনের ওপর হামলা চালান। এ সময় মামুনকে মারধর করে আইফোন ও নগদ ৩২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পাশাপাশি তার গোডাউনে থাকা ১৮ হাজার পিস সোয়েটার (মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা) লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ পেয়ে বাসন থানা পুলিশ মামুনের লুণ্ঠিত মোবাইল ফোনটি শাহীন নূর আলমের কাছ থেকে উদ্ধার করলেও মামলা নেয়নি। স্থানীয়রা জানান, কনস্টেবল শাহীন নূর আলম জিএমপি কমিশনারের সাবেক বডিগার্ড ছিলেন। তিনি এলাকায় একটি অফিস কাম গোডাউন ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সুদে টাকা লেনদেনের ব্যবসা চালাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি জামানত হিসেবে নেওয়া ব্ল্যাংক চেক অন্যের নামে ব্যবহার করে সুদের নামে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন।বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ শাহীন খান বলেন, ঘটনার পর উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সমাধান না হওয়ায় তাদের আদালতের পরামর্শ দেওয়া হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান জানান, অভিযুক্ত কনস্টেবল শাহীন নূর আলম বর্তমানে জিএমপিতে কর্মরত নন, তাকে ডিএমপিতে বদলি করা হয়েছে। তবে কনস্টেবল শাহীন নূর আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।