নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের পৃথক টিম আজ (২৮ অক্টোবর ২০২৫) দেশে চারটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ভূমি খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেবা প্রদানে অব্যবস্থাপনার অভিযোগের ভিত্তিতে এসব অভিযান চালানো হয়। রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবায় নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাঙ্গামাটি। অভিযানকালে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উপস্থিত নেই শুধুমাত্র একজন ঝাড়ুদার দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তর ধূলিমলিন ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। রান্নাঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের খাবার প্রস্তুত ও ওষুধ রেজিস্টার দীর্ঘদিন হালনাগাদ না করার প্রমাণ মেলে। সদ্য নির্মিত নতুন ভবনের নিম্নমানের নির্মাণকাজও দুদক টিমের নজরে আসে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনফোর্সমেন্ট টিম। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খালের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগে অভিযান চালানো হয়। দুদক প্রধান কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিম সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয় (অঞ্চল–৫) থেকে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এবং কর্পোরেশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাইট পরিদর্শন করে। সরকারি খাস জমিতে ভবন নির্মাণ হচ্ছে কি না তা যাচাই শেষে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি গ্রহণ ও পদোন্নতিতে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালী। অভিযানকালে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে রেকর্ড সংগ্রহ করে দেখা যায়, অভিযোগে উল্লিখিত ব্যক্তিদের পদোন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) অনুমোদন ছাড়াই পদোন্নতির ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় অনিয়ম ও রোগীর মৃত্যু সংক্রান্ত অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহী। এনফোর্সমেন্ট টিম ১৬ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ড পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সদের বক্তব্য গ্রহণ করে এবং প্রাসঙ্গিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা শেষে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। দুদক জানায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে, এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।