নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট বুধবার (২৯ অক্টোবর ২০২৫) একযোগে চারটি জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত অভিযানটি পরিচালিত হয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন টঙ্গী শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট ও মৈত্রী শিল্পে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে। গাজীপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে পরিচালিত এই অভিযানে এনফোর্সমেন্ট টিম প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালককে অনুপস্থিত অবস্থায় পায়। টিম কারখানা ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ের টেন্ডার আহ্বান, কাঁচামাল ক্রয় ও আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করে। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় একাধিক অসঙ্গতি ও অনিয়ম রয়েছে। বিশেষ করে ক্রয়কৃত নতুন যন্ত্রপাতির মধ্যে কয়েকটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে, অথচ সেগুলোর জন্য সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ। দুদক টিমের জিজ্ঞাসাবাদে কারখানা ব্যবস্থাপক কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন। এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র বিস্তারিত যাচাই করে কমিশনের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানায়।।একই দিনে আরও তিন জেলায় দুদকের অভিযান পরিচালনা করেছে।ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা প্রদানে হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে দুদক টিম ছদ্মবেশে অভিযান চালায়। টিম রোগীদের খাবারের পরিমাণ কম দেওয়া, চিকিৎসা সেবায় ত্রুটি ও রেকর্ডের অসঙ্গতি চিহ্নিত করে।চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আগ্রাবাদের “বালুর মাঠ” খাস খেলার মাঠ বেআইনিভাবে বরাদ্দ ও দখল সহায়তার অভিযোগে অভিযান পরিচালিত হয়। টিম রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় জানতে পারে, লিজ শর্ত ভঙ্গ করে ১০১ কাঠা জমি মর্টগেজ করে ব্যাংক ঋণ নেওয়া হয়েছে। চিলমারীতে দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতি কর্তৃক সদস্যদের কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানে দেখা যায়, রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়া সত্ত্বেও সমিতি সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ চালিয়ে গেছে এবং টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছে। একদিনে চারটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে মাঠে নামে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। এর মধ্যে গাজীপুরের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় অধীন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির চিত্র সবচেয়ে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। টেন্ডার অনিয়ম, অকেজো যন্ত্রপাতি ও আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি তদন্তের আওতায় এনেছে দুদক। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি অভিযানের বিস্তারিত প্রতিবেদন শিগগিরই কমিশন সদর দফতরে জমা দেওয়া হবে।